Santiniketan Heritage
  • Home
  • Art & Culturte
    • Heritage Culture
  • Festival Calender
  • Santiniketan Blogs
  • Submit Your Article
  • Shop
  • Contact Us
  • 0
Author

ssayan602@gmail.com

ssayan602@gmail.com

Uncategorized

শ্রীনিকেতন উৎসব (মাঘ মেলা): কৃষি প্রযুক্তির প্রচার ও গ্রামীণ উন্নয়নের পথপ্রদর্শক

by ssayan602@gmail.com
written by ssayan602@gmail.com

শ্রীনিকেতন উৎসব (মাঘ মেলা): কৃষি প্রযুক্তির প্রচার ও গ্রামীণ উন্নয়নের পথপ্রদর্শক

উদ্দেশ্য:

শ্রীনিকেতন উৎসব, যা মাঘ মেলা নামে পরিচিত, কৃষি প্রযুক্তি প্রচারের একটি গুরুত্বপূর্ণ মঞ্চ। এর মূল লক্ষ্য হলো কৃষকদের সর্বশেষ কৃষি প্রযুক্তি ও বিজ্ঞান সম্পর্কে সচেতন করা এবং তাদের কৃষি সমস্যা সমাধানে বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে সরাসরি মিথস্ক্রিয়ার সুযোগ প্রদান।

এই উদ্যোগ শিক্ষার্থীদের জন্য বাস্তব জীবনের অভিজ্ঞতা অর্জনের সুযোগ তৈরি করে। কৃষি প্রযুক্তি প্রচারে সক্রিয় অংশগ্রহণের মাধ্যমে তারা তাদের জ্ঞান ও দক্ষতা বিকশিত করতে পারে।

গুরুদেব রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের উক্তি—The principles of “seeing is believing”
and “not aware – not known, not known
– not practiced” are the basis of this practice

ইতিহাস ও প্রেক্ষাপট:

১৯২২ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি, গুরুদেব রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর শ্রীনিকেতন প্রতিষ্ঠা করেন। এই মেলা প্রথম আয়োজন করা হয় ২৩ মাঘ, ১৩২৮ বঙ্গাব্দে। প্রতিষ্ঠা দিবস উপলক্ষে প্রতিবছর ২৩-২৫ মাঘ (৬-৮ ফেব্রুয়ারি) শ্রীনিকেতনে এই মেলা অনুষ্ঠিত হয়।

মেলার প্রধান আকর্ষণ:

  1. কৃষি পণ্য ও প্রযুক্তির প্রদর্শনী।
  2. গ্রামীণ হস্তশিল্প প্রদর্শনী।
  3. লোক সংস্কৃতির পরিবেশনা।

মেলার কার্যক্রম:

মেলার সময় কৃষি প্রযুক্তি প্রচারের জন্য বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালিত হয়:

  • থিমভিত্তিক প্রদর্শনী (যেমন সমন্বিত কৃষি ব্যবস্থা, টেকসই কৃষি)।
  • পোস্টার, মডেল ও লিফলেটের মাধ্যমে তথ্য সরবরাহ।
  • শিক্ষার্থীদের দ্বারা পরিচালিত প্রদর্শনী ও কৃষকদের প্রশ্নের উত্তর প্রদান।
  • কৃষকদের সেরা ফসল প্রদর্শন ও প্রতিযোগিতা।

সাফল্য:

  1. কৃষকদের সচেতনতা বৃদ্ধি: মেলার সময় কৃষি প্রযুক্তি প্রদর্শনীতে বিপুল সংখ্যক দর্শনার্থীর উপস্থিতি এবং প্রদর্শনী শেষে কৃষকদের মধ্যে নতুন প্রযুক্তি গ্রহণের প্রবণতা এই উদ্যোগের সফলতার পরিচায়ক।
  2. শিক্ষার্থীদের অভিজ্ঞতা: মাঘ মেলার অংশগ্রহণ শিক্ষার্থীদের তাত্ত্বিক জ্ঞানকে বাস্তব অভিজ্ঞতার সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করতে সহায়তা করে।

চ্যালেঞ্জ ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা:

তিন দিনের মেলার মধ্যে প্রযুক্তি হস্তান্তর সম্পূর্ণ করা কঠিন। মেলার পাশাপাশি দীর্ঘমেয়াদি উদ্যোগ, যেমন:

  • উদ্ভিদ ও পশু ক্লিনিক স্থাপন।
  • মাটি স্বাস্থ্য ক্লিনিক এবং কৃষি তথ্য কেন্দ্র (ATIC) প্রতিষ্ঠা।
  • ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে কৃষি প্রযুক্তির প্রচার।

উপসংহার:

শ্রীনিকেতন উৎসব শুধু একটি মেলা নয়, এটি একটি ঐতিহ্য। এটি কৃষকদের জন্য নতুন প্রযুক্তি গ্রহণের দরজা খুলে দেয় এবং গ্রামীণ অর্থনীতির উন্নয়নে অবদান রাখে। গুরুদেবের ভাবনা ও আদর্শের প্রতি বিশ্বভারতীর এই মেলাটি একটি বাস্তব প্রতিফলন।

3 comments
0 FacebookTwitterPinterestEmail
1734953404510
Uncategorized

After Four Years, Visva-Bharati’s Poush Mela Returns in a New Form

by ssayan602@gmail.com
written by ssayan602@gmail.com

চার বছর পর বিশ্বভারতীর পৌষমেলার নতুন রূপ

শান্তিনিকেতনে ফিরল ঐতিহ্যের পৌষমেলা: উল্লাসে মাতোয়ারা মানুষ

চার বছরের দীর্ঘ অপেক্ষার পর বিশ্বভারতীর ঐতিহ্যবাহী পৌষমেলা ফিরল তার চিরপরিচিত জাঁকজমকের সাথে। ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্যের তকমা পাওয়ার পর এবার মেলা আয়োজন হল আরও বৃহৎ পরিসরে, যেখানে মিলেমিশে একসাথে হাত ধরেছে কেন্দ্র, রাজ্য, ও জেলা প্রশাসন।

২১ ডিসেম্বর ভোরবেলার বৈতালিক ও সানাইয়ের সুরে পূর্বপল্লির মাঠে মেলার সূচনা হয়। গৌর প্রাঙ্গণ থেকে শুরু হওয়া পৌষ উৎসবে মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্মরণে ভক্তিমূলক পরিবেশ সৃষ্টি হয়। উপস্থিত ছিলেন বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিনয়কুমার সোরেন, বীরভূমের জেলাশাসক বিধান রায়, জেলা পরিষদের সভাধিপতি কাজল শেখসহ বিশিষ্ট ব্যক্তিত্বরা।

এবারের পৌষমেলায় ১৮০০-এর বেশি দোকান বসেছে। বিভিন্ন ধরনের হস্তশিল্প, বাঙালি খাবারের স্টল, এবং স্থানীয় ব্যবসার সমাবেশে মেলা জমজমাট। শিল্পী ও দর্শনার্থীরা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে মাতোয়ারা হচ্ছেন। বাউল গান, নাচ, নাটক, এবং শান্তিনিকেতনের ঐতিহ্যবাহী আলোকসজ্জা আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু।

পৌষমেলার আকর্ষণীয় দিকগুলো

  • সাংস্কৃতিক পরিবেশনা: বাউল গান, নাটক ও নাচের পাশাপাশি স্থানীয় শিল্পীদের সৃষ্টিশীল পরিবেশনা।
  • স্থানীয় হস্তশিল্পের প্রদর্শনী: মেলায় স্থান পেয়েছে পাটের ব্যাগ, কাঁথার কাজ, চামড়ার সামগ্রী, এবং নকশিকাঁথার বিভিন্ন ধরনের পণ্য।
  • খাবারের মেলা: মোয়া, পিঠে-পুলির স্টল থেকে শুরু করে স্থানীয় খাবারের স্বাদ নেওয়ার সুযোগ।
  • আলোকসজ্জা ও ঐতিহ্যবাহী পোশাক: ধুতি-পাঞ্জাবি-শাল ও সাদা শাড়ি পরে ঐতিহ্যকে স্মরণ করা।
  • ছাতিমতলার বিশেষ আয়োজন: সন্ধ্যায় উদয়ন বাড়ি ও ছাতিমতলায় মনোমুগ্ধকর আলোকসজ্জা।
1734953385028

পৌষমেলার গুরুত্ব

পৌষমেলা শুধুমাত্র একখানি উৎসব নয়, এটি শান্তিনিকেতনের প্রাণ। এটি বাঙালির মাটির টান, সংস্কৃতির বৈচিত্র্য এবং মানুষের মিলনমেলা। সারা দেশের মানুষ এই উৎসবে অংশ নিয়ে নিজেদের ঐতিহ্যের সাথে নতুন করে জুড়ে যায়।

এবারের মেলায় রমরমা ভিড় এবং উৎসবমুখর পরিবেশ দেখে প্রমাণ, শান্তিনিকেতনের পৌষমেলা এখনও বাঙালির হৃদয়ে বিশেষ স্থান ধরে রেখেছে।

আসুন, অংশ নিন এই মিলনমেলায়

পৌষমেলা চলবে ২৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত। আপনিও আসুন এই উৎসবের সাক্ষী হতে। এখানে এসে অনুভব করুন বাংলার ঐতিহ্যের স্পর্শ, সুর এবং সংস্কৃতির এক অনন্য মেলবন্ধন।

A Celebration of Heritage: Poush Mela Revives in Santiniketan

After a hiatus of four long years, the iconic Poush Mela of Visva-Bharati has returned with its traditional grandeur. This year’s festival marks a significant milestone as it is being celebrated in the wake of Santiniketan receiving UNESCO World Heritage recognition. With seamless collaboration between the central government, state authorities, and district administration, the event has become more vibrant and inclusive than ever before.

On the morning of December 21, the fair was inaugurated at Purvapalli Grounds in Santiniketan with the soulful melodies of Baitalik and the resonating tunes of the Shehnai. The inauguration witnessed the presence of distinguished personalities, including Visva-Bharati Vice-Chancellor Binay Kumar Soren, Birbhum District Magistrate Bidhan Roy, and District Council Chairperson Kajal Sheikh.

This year, the fair boasts over 1,800 stalls, featuring a wide array of traditional handicrafts, artisanal goods, and local cuisine. From cultural performances to mesmerizing lighting arrangements, Poush Mela has become a hub of excitement for locals and visitors alike.

Highlights of Poush Mela 2024

  • Cultural Extravaganza: Enjoy enthralling Baul songs, traditional dances, and dramatic performances by local and regional artists.
  • Handicraft Displays: Explore exquisite collections of jute bags, Kantha stitch embroidery, leather goods, and other handmade products.
  • Food Delights: Relish the authentic flavors of Bengal with stalls serving pithe-puli, moa, and other traditional delicacies.
  • Traditional Attire: Attendees don traditional outfits – men in dhoti-panjabi-shawl and women in elegant white sarees – honoring the heritage of the land.
  • Lighting Arrangements: Witness stunning illuminations at Udayan Bhavan and Chhatimtala, creating a magical ambiance each evening.
1734953412742

Why Poush Mela Matters

  • Poush Mela is not just a festival; it is the heart of Santiniketan’s cultural identity. It represents Bengal’s rich heritage, artistic brilliance, and the spirit of unity. This iconic event brings together people from all walks of life, offering a perfect blend of tradition and modernity.
  • The vibrant atmosphere, combined with the soulful performances and an extensive marketplace, continues to make Poush Mela an unforgettable experience for everyone. This year, the fair reaffirms its position as a cultural treasure trove and a vital symbol of Bengali pride.
  • Join the Celebration

    Poush Mela will continue until December 28. Don’t miss this incredible opportunity to immerse yourself in the colors, sounds, and flavors of Bengal. Be a part of this grand festival, where heritage meets harmony, and make memories that last a lifetime!

3 comments
0 FacebookTwitterPinterestEmail
Uncategorized

শান্তিনিকেতনের খ্রিস্ট উৎসব: রবীন্দ্রনাথের অনন্য সৃষ্টি

by ssayan602@gmail.com
written by ssayan602@gmail.com

শান্তিনিকেতনের খ্রিস্ট উৎসব: এক ঐতিহাসিক, দার্শনিক ও সাংস্কৃতিক যাত্রাপথ

আজ থেকে একশো আট বছর আগে, ১৯১০ সালের পৌষ উৎসবে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর শান্তিনিকেতনে এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা করেন। প্রথাগত আদি সমাজীয় উপাসনার সীমা ছাড়িয়ে তিনি বিশ্বমানবের বহুমুখী কর্মধারা, আদর্শ ও সাধনাকে একত্রিত করে শান্তিনিকেতনের প্রথম খ্রিস্ট উৎসব আয়োজন করেন। সেই থেকে মানবপুত্র যিশু খ্রিস্টের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন এবং তাঁর জীবনদর্শন উদ্‌যাপন করে চলছে শান্তিনিকেতনের এই বিশেষ উৎসব।

রবীন্দ্রনাথ ও যিশুর প্রতি তাঁর দৃষ্টিভঙ্গি

রবীন্দ্রনাথ তাঁর ছেলেবেলা থেকেই খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বী মানুষের সঙ্গে পরিচিত ছিলেন। শৈশবের এই আন্তরিক মেলামেশা এবং পরবর্তী সময়ে যিশুর জীবন ও খ্রিস্টধর্মের প্রতি গভীর শ্রদ্ধাবোধ তাঁকে ‘মানবপুত্র’ যিশুকে ন্যায়, সত্য, প্রেম এবং মানবতার প্রতীক হিসাবে গ্রহণ করতে উদ্বুদ্ধ করে। সেন্ট জেভিয়ার্স স্কুলে পড়াকালীন ফাদার ডি. পেনেরান্ডার মতো খ্রিস্টান যাজকদের সংস্পর্শ তাঁর জীবনে গভীর প্রভাব ফেলেছিল।

খ্রিস্টধর্মের প্রতি রবীন্দ্রনাথের শ্রদ্ধা

রবীন্দ্রনাথ তাঁর ছেলেবেলা থেকেই খ্রিস্টধর্মের সঙ্গে পরিচিত ছিলেন। তিনি খ্রিস্টান মিশনারিদের সংস্পর্শে এসে যিশু খ্রিস্টের জীবন ও শিক্ষা সম্পর্কে গভীর আগ্রহী হয়ে ওঠেন। সেন্ট জেভিয়ার্স স্কুলে পড়াকালীন ফাদার ডি. পেনেরান্ডার মতো খ্রিস্টান ধর্মযাজকদের সান্নিধ্যে তিনি প্রভাবিত হন। তাঁর আত্মজীবনী জীবনস্মৃতি-তে তিনি ফাদার পেনেরান্ডার সম্পর্কে লিখেছেন, “তাঁহাকে দেখিলেই মনে হইত, তিনি সর্বদাই আপনার মধ্যে যেন একটি দেবোপাসনা বহন করিতেছেন।”

যিশু খ্রিস্টকে রবীন্দ্রনাথ দেখেছিলেন ‘মানবপুত্র’, ‘মহাত্মা’, এবং ‘কল্যাণের দূত’ হিসেবে। তাঁর জীবনাদর্শের মধ্যে তিনি খুঁজে পেয়েছিলেন সত্য, ন্যায়, অহিংসা ও মানবকল্যাণের উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।

রবীন্দ্রনাথ ছিলেন একজন বিশ্বমানব। তাঁর দৃষ্টিতে সকল ধর্মের মূল ছিল এক। তিনি বিভিন্ন ধর্মের মূল্যবোধ ও শিক্ষা গ্রহণ করেছিলেন। যিশু খ্রিস্টের জীবন ও শিক্ষা তাঁকে বিশেষভাবে অনুপ্রাণিত করেছিল। তিনি যিশুকে দেখতেন একজন মহৎ মানব হিসেবে, যিনি মানবতার সেবা করেছেন।

শান্তিনিকেতনে পৌষ মেলার সময় খ্রিস্ট উৎসব পালন করে রবীন্দ্রনাথ মানুষকে শিখিয়েছিলেন ধর্মের মূল মূল্যবোধের প্রতি সম্মান জানাতে। এই উৎসব শুধু ধর্মীয় অনুষ্ঠানই ছিল না, বরং এটি ছিল মানবতার এক উৎসব।

শান্তিনিকেতনের খ্রিস্ট উৎসবের বিশেষত্ব হল এটি ধর্মীয় সীমাবদ্ধতাকে ছাড়িয়ে গিয়ে মানবতাবাদী মূল্যবোধকে প্রাধান্য দেয়। এই উৎসবের মধ্য দিয়ে রবীন্দ্রনাথ প্রমাণ করেছিলেন যে, সকল ধর্মের মূল এক। সকলে মিলে শান্তি ও ভ্রাতৃত্বের বন্ধনে আবদ্ধ হতে পারে।

খ্রিস্ট উৎসবের প্রবর্তন

রবীন্দ্রনাথ তাঁর চিন্তা ও দর্শনের আলোকে ১৯১০ সালের পৌষ উৎসবে খ্রিস্ট উৎসবের প্রবর্তন করেন। এই উৎসবের মূল আকর্ষণ ছিল ভারতীয় ঔপনিষদিক দর্শন এবং খ্রিস্টীয় ভাবনার এক সুন্দর সংমিশ্রণ। তাঁর লেখা গান ও উপাসনা পাঠের মাধ্যমে তিনি যিশুর জীবনাদর্শকে নতুন প্রজন্মের কাছে উপস্থাপন করেন।
তিনি লিখেছেন, “খ্রিস্টান ধর্মবুদ্ধি প্রতিদিন বলছে— মানুষের মধ্যে ভগবানের সেবা করো।” তাঁর মতে, যিশুর শিক্ষা শুধুমাত্র পূজার্চনায় সীমাবদ্ধ ছিল না। মানুষের সেবা ও আত্মত্যাগই ছিল তাঁর জীবনের মূল লক্ষ্য। এই ভাবনাই রবীন্দ্রনাথের খ্রিস্ট উৎসব উদযাপনের প্রেরণা হয়ে ওঠে।

যিশুর মানবতার বাণী

“পিতা নোহসি, পিতা নো বোধি”—এই বেদমন্ত্রের ভাবনাকে রবীন্দ্রনাথ খ্রিস্ট উৎসবের মাধ্যমে উপস্থাপন করেছিলেন। যিশুর মানবিকতার বাণী আজও আমাদের মনে করিয়ে দেয় ভগবান ও মানবের একাত্মতার গভীরতা। প্রার্থনা এই, আমরা যেন অন্তরে উপলব্ধি করতে পারি সেই মহান চেতনা।

শান্তিনিকেতনে খ্রিস্ট উৎসবের আয়োজন

তিন দিনব্যাপী পৌষ উৎসবের শেষ দিনে অনুষ্ঠিত হয় খ্রিস্ট উৎসব। মন্দিরের মেঝে রঙিন আলপনায় সজ্জিত করা হয়। ঝাড় লণ্ঠন ও মোমের আলোয় চারদিক আলোকিত হয়ে ওঠে। শান্তিনিকেতনের নিজস্ব ঐতিহ্য বজায় রেখে উচ্চারিত হয় উপনিষদের মন্ত্র, গাওয়া হয় রবীন্দ্রনাথের গান—“একদিন যারা মেরেছিল তারে গিয়ে।” বাইবেলের কিছু অংশও পাঠ করা হয়।

খ্রিস্ট উৎসবের অন্যতম আকর্ষণ হল ছাতিমতলায় বৈতালিক দলের গান। মোমবাতি হাতে তারা যখন মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথের ধ্যানবেদীতে উপস্থিত হন, তখন গানের সুরে শান্তিনিকেতনের আকাশে ভেসে আসে—“মোর হৃদয়ের গোপন বিজন ঘরে প্রিয়তম হে জাগো জাগো।”

খ্রিস্ট উৎসবের তাৎপর্য

শান্তিনিকেতনের খ্রিস্ট উৎসব শুধুমাত্র একটি ধর্মীয় উৎসব নয়, এটি মানবতার জয়গান। যিশুর জীবন ও তাঁর শিক্ষার মাধ্যমে রবীন্দ্রনাথ বিশ্বমানবতার প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন। তিনি বলেছিলেন, বড়দিন শুধুমাত্র আনন্দের দিন নয়, এটি আত্মপরীক্ষা ও নম্রতার দিন। তাঁর এই উপলব্ধি খ্রিস্টীয় ও ভারতীয় দর্শনের এক অপূর্ব মেলবন্ধন।
শান্তিনিকেতনের খ্রিস্ট উৎসব আজও এক বিশেষ বার্তা বহন করে। এটি শুধুমাত্র একটি ঐতিহ্য নয়, বরং বিভিন্ন ধর্ম ও সংস্কৃতির মধ্যে সেতুবন্ধন তৈরি করে এক বিশ্বমানবতার আহ্বান।

3 comments
0 FacebookTwitterPinterestEmail
শান্তিনিকেতন

জানেন তো,প্রথম পৌষমেলায় খরচ ?

by ssayan602@gmail.com
written by ssayan602@gmail.com

জানেন তো, প্রথম পৌষমেলায় কত খরচ হয়েছিল ?

জানেন তো, প্রথম পৌষমেলায় খরচ হয়েছিল ১৭৩২ টাকা ১০ আনা। পৌষ উৎসব-মেলাকে গুরুদেব তাঁর বিদ্যালয়ের শিক্ষাদর্শের সঙ্গে যুক্ত করার পরিকল্পনা করেছিলেন। শান্তিদেব ঘোষ একবার বলেছিলেন, “সাতই পৌষের উৎসব শান্তিনিকেতনের দুর্গোৎসবের মতো। ভোরবেলায় বৈতালিকে ‘তোমার নাম দিয়ে দাও ধুয়ে’ গানটি গেয়ে দিনুদার পাশে পাশে আশ্রম পরিক্রমা করতাম।”

কল্পনা করুন একবার—পৌষ উৎসবে শান্তিনিকেতনে রবীন্দ্রনাথ; সঙ্গে ক্ষিতিমোহন সেন, সাগরময় ঘোষ। প্রমথনাথ বিশী স্মরণ করেন, “সন্ধ্যার আগে খাওয়া-দাওয়া ছিল বেশ রাজকীয়। খাবারের পরে আবার মন্দিরে যাওয়া, মন্দিরের সেই অসাধারণ আলোকসজ্জা!”

কলকাতা দূরদর্শনের প্রথম দিকের অনুষ্ঠানগুলোর মধ্যে পৌষমেলা সম্প্রচার দর্শকদের জন্য বিশেষ আকর্ষণ হয়ে উঠেছিল। গত বছর ১২০ বছর পূর্ণ করেছে এ মেলা। প্রথম পৌষমেলায় খরচ হয়েছিল ১৭৩২ টাকা ১০ আনা। মেলার রূপে কত পরিবর্তন এসেছে! গত চল্লিশ বছরে ক্যামেরার ফ্রেমে ধরা পড়েছে এই পরিবর্তনের নানা দিক। মেলার গ্রামীণ চরিত্রে শহুরে প্রভাব এসে পড়েছে। এখন মেলায় গাড়ি, টিভি, স্কুটার, কম্পিউটারের স্টল দেখা যায়, তবে সেই সাবেকি মেলার মাটির পুতুল, কাঠের খেলনা, সাঁওতালদের বাঁশি, তিরধনুক, রূপদস্তার গয়না—এসব এখনো হারিয়ে যায়নি।

মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর প্রথম পৌষমেলার আয়োজন করেছিলেন কলকাতার কাছে গোরিটির বাগানে। পঞ্চাশ বছর পর, ১৮৯৪ সালে, মহর্ষির ট্রাস্ট ডিড অনুসারে শান্তিনিকেতনে আনুষ্ঠানিকভাবে পৌষমেলার সূচনা হয়। তবে পৌষ উৎসব শুরু হয়েছিল ১২৯৮ সালের ৭ পৌষে, ইংরেজি ১৮৯১ সালে। মহর্ষি কখনো শান্তিনিকেতনের মন্দির বা মেলা দেখেননি।

বর্তমানের মেলা এক বিপুল জনসমাবেশে পরিণত হয়েছে, বিশেষত ২৫ ডিসেম্বরের ভিড় যেন উপচে পড়ে। তবু মন্দিরে আয়োজিত খ্রিস্টোৎসবের সৌন্দর্য আজও অমলিন। আশ্রমিক সংঘের বার্ষিক অধিবেশন, প্রাক্তন আশ্রমিকদের স্মরণসভা, সাঁওতালদের খেলাধুলা, আর রাতের বাজি পোড়ানো মেলার ঐতিহ্যকে ধরে রেখেছে। মেলার শেষের বাজি, যেখানে রবীন্দ্রনাথের মুখ ভেসে ওঠে, সত্যিই মুগ্ধ করে।

রবীন্দ্রনাথ প্রতি ৭ পৌষে মন্দিরে যে ভাষণ দিতেন, তা ছিল আশ্রমবাসীদের জন্য অনুপ্রেরণাদায়ক। “…তিনি আজ এই পুণ্যদিনের প্রথম ভোরের আলোতে উৎসব দেবতার উজ্জ্বল বেশ পরে আমাদের সামনে এসে দাঁড়িয়েছেন— জাগো, আজ আশ্রমবাসী সকলে জাগো।”

১৯৯১ সালে দূরদর্শনে পৌষ উৎসবের শতবর্ষ এবং ১৯৯৪-এ মেলার শতবর্ষের লাইভ সম্প্রচার হয়েছিল। সেই সময় ছাতিমতলায় উপাসনায় উপাচার্য সুরজিৎ সিংহ, গানে কণিকা বন্দ্যোপাধ্যায়, পাঠে সুপ্রিয় ঠাকুর, এবং মন্ত্রোচ্চারণে মোহনলাল বাজপেয়ীর মতো ব্যক্তিত্বদের দেখা যেত। মেলায় পুরনো আশ্রমিকদের ভিড়, শঙ্খ ঘোষ, শম্ভু মিত্র, অমর্ত্য সেনের উপস্থিতি ছিল বিশেষ স্মরণীয়।

বাউলদের আখড়ায় রাত জেগে সনাতন দাস বাউলের গান শোনা, কিংবা মেলায় ‘চাঁদের হাট’-এর মতো সৃষ্টিশীল উদ্যোগ আজও শান্তিনিকেতনের অতীতকে বর্তমানের সঙ্গে জুড়ে রাখে। সব মিলিয়ে, পরিবর্তনের মধ্যেও মেলার ঐতিহ্য আজও অনেক কিছু ধরে রেখেছে।

2 comments
10 FacebookTwitterPinterestEmail
Typology

Created by Meks · Powered by WordPress
All rights reserved

Keep in touch

Facebook Twitter Instagram Pinterest Youtube Email

Recent Posts

  • কলাভবন বাইরে থেকেই দেখার সুযোগ — রোহিত সেনের উদ্যেগে বায়োস্কোপ এবার শান্তিনিকেতন

  • পর্যটকদের জন্য খুলে দেওয়া হল বিশ্বভারতীর ক্যাম্পাস

  • বিশ্বভারতীতে পালন হল বসন্ত উৎসব, আবিরে আবিরে রাঙা শান্তিনিকেতন

  • শান্তিনিকেতনে এবারও হচ্ছে না বসন্তোৎসব, মনখারাপ বিশ্বভারতীর পড়ুয়াদের , SANTINIKETA BASANTA UTSAV 2025

  • শ্রীনিকেতন উৎসব (মাঘ মেলা): কৃষি প্রযুক্তির প্রচার ও গ্রামীণ উন্নয়নের পথপ্রদর্শক

  • After Four Years, Visva-Bharati’s Poush Mela Returns in a New Form

Newsletter

Subscribe my Newsletter for new blog posts, tips & new photos. Let's stay updated!

Categories

  • Uncategorized (3)
  • শান্তিনিকেতন (12)
  • Facebook
  • Twitter
  • Instagram
  • Pinterest
  • Youtube
  • Vimeo
  • Cart
  • Checkout
  • Contact Us
  • Festival Calender
  • Festivals
  • Heritage Culture
  • Home
  • My account
  • Our Blog
  • Refund and Returns Policy
  • Shop
  • Shop new
  • Submit Your Article
  • Terms & Condition

@2025 - All Right Reserved.

Santiniketan Heritage
  • Home
  • Art & Culturte
    • Heritage Culture
  • Festival Calender
  • Santiniketan Blogs
  • Submit Your Article
  • Shop
  • Contact Us

Shopping Cart

Close

No products in the cart.

Close